১২০০ টাকা এবং একজন নূরজাহান বেগমের ভীষণ আনন্দের গল্প
ঘটনাটা পরশু রাত ১০ টার দিকের। অফিস শেষে ফেরার পথে মসজিদের পাশের ঘন অন্ধকারাচ্ছন্ন জায়গাটায় চোখ পড়লো মানুষটার দিকে।
এই অন্ধকারে এত রাতে সে একা দাঁড়িয়ে কি করছে এটা বোঝার জন্য কিছুটা সময় ক্ষেপন করলাম অফিসের সামনে দাঁড়িয়েই। মিনিট বিশেক পর কাছে এগিয়ে যেতেই দেখি অঝোরে দাঁড়িয়ে কাঁদছে সে।
আমাকে দেখে কান্নার গতি বাড়লো আরও।
জানালো, মানুষের কাছে সারাদিন হাত পেতেই দিনাতিপাত করতে হয় তার। আজ সারাদিনের আয় আঁচল থেকে বের করে এক মনে গুনছিল যখন তখন কে বা কারা পাশে রাখা তার একমাত্র সম্বল মোবাইল টা চুরি করে নিয়ে গিয়েছে। এখানেই আসতো সরকারের তাকে দেয়া বিধবা ভাতার টাকা।
মোবাইল হারিয়ে দিশেহারা সে।
জিজ্ঞেস করলাম কত টাকা দিয়ে কিনেছিলেন মোবাইলটা। বললো ১২০০। টাকাটা ম্যানেজ করে তার হাতে দিলাম সেদিন।
আজ বিকেলে অফিস থেকে বের হবার সময় দেখি সিঁড়ির এক কোনে দাঁড়িয়ে আছে সে। আজ এসেছে আমাকে দেখতে আর নতুন কেনা মোবাইল ফোনটা দেখাতে।
আজও চোখে পানি তার তবে আজ ভীষণ আনন্দে কাঁদছে সে।
সেদিন নাম জিজ্ঞেস করতে ভুলে গিয়েছিলাম। আজ জিজ্ঞেস করলাম, বাবাজি আপনার নাম? বললো ‘নূরজাহান’। আমি বললাম, আপনি তো পৃথিবীর আলো। হেসে দিলো শুনে।
এ হাসি অমূল্য… ভীষণ অমূল্য।